কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা সাহিত্যের এক অনন্য প্রতিভা। তার কবিতা, গান, প্রবন্ধ ও সাহিত্যকর্মে বিদ্রোহ, সাম্য ও মানবতার সুর ধ্বনিত হয়েছে বারবার। কিন্তু তার সবচেয়ে পরিচিত উপাধি হলো “বিদ্রোহী কবি”, যা তার শক্তিশালী লেখনী এবং বিপ্লবী মানসিকতার স্বীকৃতি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে অনেকেই জানতে চান, কাজী নজরুল ইসলামকে বিদ্রোহী কবি উপাধি দেন কে?
“বিদ্রোহী কবি” উপাধির পেছনের ইতিহাস
১৯২১ সালে প্রকাশিত নজরুলের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবিতা “বিদ্রোহী” তাকে বাংলার সাহিত্য জগতে নতুন পরিচয়ে পরিচিত করে তোলে। এই কবিতার ভাষা, শক্তি ও বিদ্রোহের স্পৃহা তৎকালীন ব্রিটিশ শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে এক প্রবল প্রতিরোধের প্রতিচ্ছবি হয়ে ওঠে।
এই কবিতার প্রকাশের পরপরই বিভিন্ন সাহিত্যিক ও পাঠকের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। প্রথমবারের মতো সাহিত্যে এমন এক শক্তিশালী বিদ্রোহের প্রতিফলন দেখা যায়, যা নজরুলকে বিশেষ মর্যাদার আসনে বসিয়ে দেয়।
কে প্রথম নজরুলকে “বিদ্রোহী কবি” বলেন?
কাজী নজরুল ইসলামকে “বিদ্রোহী কবি” উপাধি দেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও সম্পাদক মোহিতলাল মজুমদার। তিনি নজরুলের সাহসী লেখনীর প্রতি মুগ্ধ হয়ে এবং বিশেষত “বিদ্রোহী” কবিতার জন্য এই বিশেষ উপাধি প্রদান করেন।
মোহিতলাল মজুমদার ছিলেন একজন স্বনামধন্য সাহিত্য সমালোচক এবং কবি। তিনি নজরুলের কাব্য প্রতিভা সম্পর্কে গভীরভাবে অবগত ছিলেন এবং তার সাহসী ও বিদ্রোহী মনোভাবকে স্বীকৃতি দিয়ে তাকে এই উপাধি প্রদান করেন।
“বিদ্রোহী কবি” উপাধির গুরুত্ব
১. নজরুলের বিপ্লবী সত্তার প্রতীক – তার কবিতা ও লেখনী ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠে।
২. বাংলা সাহিত্যে এক নতুন ধারা – বিদ্রোহ ও মানবতার সুর তিনি সাহিত্যে শক্তিশালীভাবে উপস্থাপন করেন।
৩. জাতীয় কবি হিসেবে প্রতিষ্ঠা – পরবর্তীতে বাংলাদেশ তাকে জাতীয় কবির মর্যাদা দেয়, যেখানে এই উপাধির বিশেষ ভূমিকা ছিল।